সাফল্যের তারকারা কর্মসূচি কি? কেন আপনার সন্তানের জন্য এই কোর্সটি গুরুত্বপূর্ন?

সাফল্যের তারকারা

সাফল্যের তারকারা

সাফল্যের তারকারা কর্মসূচি কি?

এটি শিক্ষার্থীদের সফল ও আদর্শ মানুষ ‍হিসেবে গড়ে উঠার জন্য সামগ্রিক ব্যক্তিত্বের বিকাশের একটি অনন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে মনোবিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও আন্তর্জাতিকভাবে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের সমন্বয়ে প্রণীত এই প্রোগ্রামটি প্রো-বেটার লাইফ(পিবিএল) বাংলাদেশ নিয়ে এসেছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে বেড়ে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় দৃঢ়তা ও আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধিতে এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত কার্যকর ভুুমিকা রাখছে। এছাাড়াও শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলী এবং সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ, সফল ও নিরাপদ জীবনযাপনের কলাকৌশল এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিখিয়ে দেওয়া হয়। সর্বোপরি এই প্রশিক্ষণে অন্তর্ভূক্ত  কার্যক্রমগুলো সমসাময়িক কালের সবচেয়ে আধুনিক পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বন করে প্রণীত হয়েছে যা  সর্বোচ্চ কৃতিত্ব অর্জনে শিক্ষার্থীদেরকে সহায়তা করবে এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দক্ষতা শেখাবে।

উদ্দেশ্য (Purpose)

বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ ঘোষিত লক্ষ্য ও অভিপ্রায় বাস্তবে পরিণত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকারী উদ্দোগকে সহযোগিতা করা। এছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২৩ এর মাধ্যমে পরিবর্তিত শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করতে সার্বিক সহায়তা প্রদান করা।

লক্ষ্য(Objectives)

শিক্ষার্থীদের কে-

১. দেশের জন্য কাজ করতে আখাঙ্খা ও দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করা।

২. মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করা।

৩. নেতৃত্বের গুণাবলি ও যোগাযোগ দক্ষতা (Communication skills) বৃদ্ধি করা।

৪. আদর্শ শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তোলা এবং তাদের মধ্যে  আজীবন শিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ জাগিয়ে তোলা।

৫. প্রয়োগিক কর্মে দক্ষতা এবং পরিবেশ বা নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নেয়ার সক্ষমতা তৈরী করা

 

কেন এবং এর উপকারিতা কি?

আমাদের চলমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে অধিকতর বেগবান ও সার্থক করার লক্ষ্যে সহায়ক কর্মকৌশল হিসেবে পিবিএল কাজ করে যাচ্ছে। গতানুগতিক শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি একটি আধুনিক যুগোপযোগী সহপাঠ্যক্রমিক কার্যকলাপ ভিত্তিক প্রশিক্ষণের চাহিদা দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাবক মহলে অনুভূত হচ্ছিল। সেই চাহিদাকে পূরণ করার প্রয়াস থেকেই পিবিএল বাংলাদেশে এই বিশ্ববিখ্যাত প্রশিক্ষণটি নিয়ে এসেছে যা “সাফল্যের তারকারা” নামে সর্বাধিক পরিচিত। এটি শিক্ষার্থীদেরকে স্কুল ও পাঠমূখী করার পাশাপাশি নিম্নোক্তভাবে সাহায্য করবে-

১. জীবনে সফলতা অর্জন করতে ইতিবাচক মনোভাব ও দক্ষতা গড়ে তোলোর ক্ষেত্রে ।

২. সত্যিকারের মানুষ হিসেবে যেন বেড়ে উঠতে পারে তার জন্য মানবিক মূল্যবোধ ( যেমন- সততা, সহনশীলতা, আত্মসন্মান, ধৈর্য্য, আত্মবিশ্বাস, সন্মান ও বিনয়বোধ ইত্যাদি) দক্ষতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে।

৩. একবিংশ শতাব্দীর ডিজিটাল যুগে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক কর্মকান্ডে (যেমন- চাকরির বাজারে, কর্মজগতে, পেশাদারিত্বে)এগিয়ে থাকার দক্ষতা শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে।

৪. পড়াশোনা ও পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার জন্য আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক কৌশল শেখার ক্ষেত্রে।

৫. নেশা, মাদক ও যৌন হয়রানি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার কৌশল গুলো শেখার ক্ষেত্রে।

যার ফলে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়ালেখায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারবে, প্রতিযোগিতামূলক কর্মজীবনে এগিয়ে থাকতে পারবে, সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে এবং নেশা, মাদক ও যৌন হয়রানি থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।

চারটি নীতির স্তম্ভ (Four Pillars Of Principles)

কর্মসূচিটি নীতির স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত-

১. আত্ম-দক্ষতা অর্জন (Self Mastery)

২. অনুপ্রাণিত নৈতিক দৃঢ়তা (Influential Dynamics)

৩. সক্ষমতা বৃদ্ধি (Capacity Building)

৪. কল্যাণকর ও উদ্বাবনী মূলক চিন্তা (Welfare and Innovative Thinking)

 

শিক্ষাদানের মূলমন্ত্র

আমাদের শিক্ষাদানের মূলমন্ত্র হচ্ছে যে, শিক্ষার্থীরা ইতিবাচক মনোভাব ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে আত্মোন্নয়ন, আত্মবিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনে প্রেরণা পাবে। এই কর্মসূচি তাদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব ও আত্মবিশ্বাস করে তুলবে। অভ্যন্তরীন দৃঢ়তা ও আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিজেদের ভিতরে আমূল ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটাবে, পরিবারের কাজে ও স্কুলের পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়ায় দক্ষ হয়ে উঠবে। সর্বোপরি এই কর্মসূচি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতৃত্বের গুণাবলী বিকশিত করবে।

শিক্ষা দানের পদ্ধতি

শেখানোর জন্য আধুনিক শিক্ষার্থী-ভিত্তিক (Student Centred) শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ – যেমন বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যকলাপ, গল্প বলা, ভিডিও, মিউজিক, মেডিটেশন ও হাতে-কলমে অনুশীলন ইত্যাদি করা হয়। এই শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করলে শিক্ষার্থীরা  শিক্ষা গ্রহণের অনুকূল পরিবেশ পায়, খুব আনন্দের সাথে শেখে এবং বিষয়বস্তু মনে রাখতে পারে ।

কাদের জন্য এই সাফল্যের তারকারা কর্মসূচি

সপ্তম থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে পারবে ।

শ্রেণীর আকার

প্রতি ব্যাচে ২৫ জন শিক্ষার্থী।

কোর্সের মেয়াদ ও শুরুর তারিখ

আড়াই মাস। প্রতি সপ্তাহে সাধারণত (শুক্রবার ও শনিবারে) ১ দিন ক্লাস হবে। প্রতিটি ক্লাস তিন ঘন্টা ব্যাপী। তবে শিক্ষার্থী ও  অভিভাবকদের সাথে আলোচনাক্রমে কোর্স শুরু তারিখ পরিবর্তন করা যেতে পারে।

অভিভাবকদের মতামত

ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী সাফল্যের তারকারা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে এসব শিক্ষার্থী কিভাবে উপকৃত হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু অভিভাবকদের অনুভূতি নিষেধ তুলে ধরা হলো 

      “এই প্রোগ্রামটি আমার মেয়েকে আত্মবিশ্বাসী ও বন্ধুসুলভ করে তুলেছে। এখানে অংশগ্রহণের পর থেকে আমি তার মাঝে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি ।”                                                                             

-১২ বছরের মেয়ের মা।

      “আমার সন্তান পরিবারের কাজে এখন আমাকে সাহায্য করে, সেই সাথে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য বিরক্ত করা বন্ধ করেছে। এমনকি ইদানিং অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে অর্থ অপচয় নিয়ে সে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে।”                                                                                                                           

-১৫ বছরের ছেলের বাবা।